বর্ষাকাল শুরু হয়েছে আরো পক্ষপাতী আগে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব একরকম বৃষ্টিপাত হীন চলছে বৃষ্টি কাল। কিন্তু মঙ্গলবার দিবাগত রাত থেকে টানা বৃষ্টিতে ফিরে আসে বর্ষার রূপ। এতে সমতল এলাকায় আনন্দ বিরাজ করাও আতঙ্ক-শঙ্কায় সময় অতিবাহিত হচ্ছে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের তিন ডজন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে।
অতি স্নান টেম্পার ক্ষতিগ্রস্ত ট্রিপল শাউনি গলিত পানি পড়া অধিকাংশ ঘর। ঝরো হাওয়ায় অনেক ক্যাম্পের ঝোপি ঘর উড়ে যাওয়া খবর পাওয়া গেছে। রোহিঙ্গারা আতঙ্কে রয়েছেন।
বুধবার রাত সাড়ে 8 টার দিকে কুটুপালং ডাবল 'ও' ক্যাম্পের ময়নার ঘোনে পাহাড়ের একটি অংশ ভেঙ্গে পড়ে। কোন ক্ষতিই না হলেও আরো আশঙ্কা করা হচ্ছে পাহাড় ধসের। বৃষ্টি রোহিঙ্গাদের মাঝে বাড়িয়েছে দুঃখ।
তিনি আরও বলেন, কিছু উচু মাচাংঘর ও উচ্চ স্থান ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গারা আশ্রয় নিয়েছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্লাবিত লোকজন মানবেতর জীবন যাপন করছে। পাহাড়ি ঢল এখনো বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বৃষ্টি হচ্ছে না। সীমান্ত খাল দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে বাধা সৃষ্টি করে এ সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে বলেও রোহিঙ্গা নেতা ।
জানা যায়, উখিয়া-টেকনাফের প্রায় ৩৪টি ক্যাম্পে অস্থায়ীভাবে বাস করছে মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে পালিয়ে আসা প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা। যাদের বেশীর ভাগই পাদদেশ থেকে থরে থরে পাহাড়ের টিলায় ঝুপড়ি ঘর করে রয়েছেন। ফলে অতি বর্ষণ হলেই পাহাড় ধসের আশঙ্কা দেখা দেয়। টানা বর্ষণের কারণে গত দুইদিনে উখিয়া-টেকনাফের পাহাড়ে বাঁশ ও পলিথিনে তৈরি অনেক ঝুপড়ি ঘর বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়া টানা বৃষ্টিতে কাদা ও পয়ঃনিষ্কাশন এলাকার পানি চলাচলের পথে এসে দুর্ভোগ বাড়িয়েছে রোহিঙ্গাদের।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান জানায়, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টা হতে বুধবার রাত ১২ টা ২৪ ঘণ্টায় ৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে কক্সাবজারে। চলমান বর্ষা মৌসুমের শুরু হতে এটিই সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। আগামী ২৪ ঘণ্টায়ও হাল্কা থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি। কুতুপালংয়ের ডাবল 'ও' ব্লকের রোহিঙ্গা নেতা সালামত খান জানায়, মঙ্গলবার রাত থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাস রোহিঙ্গা শিবিরে দুর্ভোগ বাড়িয়েছে। রোদে টেম্পার নষ্ট হওয়া ত্রিপলের চাল থেকে বৃষ্টির পানি পড়ছে। শত শত পরিবার এ দুর্ভোগে পড়েছে। বাতাসে উড়ে গেছে অনেক পরিবারের ঘরের ছাউনি। রাত সাড়ে ৮টার দিকে ময়নার ঘোনা এলাকায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। জানমালের কোন ক্ষতি না হলেও আরো ধসের আশঙ্কায় অন্যত্র আশ্রয় খুঁজছেন অনেকে।
নায়াপাড়া ক্যাম্পের পাহাড়ের পাদদেশে আশ্রয় নেয়া আবদুস সালাম বলেন, ঘরে পানি ঢুকিয়ে পরিবারের সবাই স্রোতের রাত কাটতে থাকে। সবাই বলাবলি করছেন বৃষ্টি বাড়িয়ে পাহাড় ধসে পড়তে পারে। আমার মতো অনেকেই সকাল হলেই আশ্রয় গার্ল ভাবছেন। বালুখালী ১৯ নং ক্যাম্পের মাঝি কালা মিয়া বলেন, পাহাড়ে বৃষ্টি হলে মুহূর্তে তলিয়ে যাওয়া পথ চলবে। এসময় ঘর থেকে বেরিয়ে আসা সব কষ্টকর হয়ে পড়ে। ভারি বৃষ্টির পাহাড় ধসের আশঙ্কায় ক্যাম্পের মসজিদের মাইকে সতর্ক বার্তা পাঠানো হয়েছে।
টেকনাফের শিলাবনিয়া শিবের রোহিঙ্গা নেতা ইব্রাহিম বলেন, ক্যাম্পের ঘরগুলো নড়বড়ে। তাই হালকা বাতাসেও দুলতে থাকে। এ সময় সবাই আতঙ্কে থাকি।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো নিকারুজ্জামান চৌধুরী ও টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো রবিউল হাসান বলেন, আমরা যে কোন ধরনের বিপর্যয় মোকাবেলা করতে প্রস্তুত।
0 coment rios:
ধন্যবাদ আপনার সচেতন মন্তব্যের জন্য।